Posts

National Education Policy (2020)

  National Education Policy (2020) ভূমিকা (Introduction) শিক্ষানীতি একটি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক গতিপ্রবাহের প্রধান চালিকা শক্তি। স্বাধীনতার পর ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা বেশকিছু নীতি ও কাঠামোপ্রবন্ধমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। ১৯৮৬ সালের National Policy on Education 1986 (“NPE 1986”) ভারতীয় শিক্ষার রূপায়ণে ছিল দীর্ঘকালীন মূল দিকনির্দেশক। কিন্তু সময়ের পরিবর্তন, বৈশ্বিকীকরণ, তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার, কাজ-দুনিয়ায় দক্ষতার চাহিদা এবং শিক্ষা ও দক্ষতা সংযোগের প্রয়োজনীয়তা সব মিলিয়ে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের আবশ্যকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২০২০ সালের NEP তাই শুধু নীতিগত আপডেট নয় — এটি শিক্ষার প্রতিটি স্তর, কাঠামো ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলিতে মূলগত সংস্কার আনার সিদ্ধান্ত করেছে। এই নীতিতে শিক্ষাকে কেবলমাত্র একটি সামাজিক সুবিধা হিসেবে নয়, বরং জাতীয় উন্নয়ন, মানবসম্পদ সৃজন ও জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতি গঠনের উপাদান হিসেবে দেখা হয়েছে। শিক্ষার অ্যাক্সেস (Access),অ্যকুইটি (Equity), কোয়ালিটি (Quality), অ্যাফোর্ডেবিলিটি (Affordability) ও অ্যাকাউন্টেবিলিটি (Accountability) — পঞ্চভিত্তিক স্তম্ভ হিসেবে নির্ধারণ কর...

National Knowledge Commission (2009)

National Knowledge Commission (2009)   ভূমিকা ২১শ শতাব্দী হচ্ছে জ্ঞান, তথ্য ও উদ্ভাবনের যুগ। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে হলে কোনো দেশকে জ্ঞানভিত্তিক সমাজে রূপান্তরিত হওয়া অপরিহার্য। ভারতের সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে এই জ্ঞান-কেন্দ্রিক উন্নয়নের মূল স্রোতে যুক্ত করার লক্ষ্যে ভারত সরকার ২০০৫ সালে National Knowledge Commission (NKC) গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর প্রত্যক্ষ উদ্যোগে এবং প্রযুক্তি বিপ্লবের অগ্রদূত স্যাম পিত্রোদার নেতৃত্বে এই কমিশন দেশব্যাপী শিক্ষা, গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি, উদ্ভাবন, ভাষা, শিল্প-উৎপাদন ও ই-গভর্নেন্স ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করে। NKC-র মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের সর্বস্তরের মানুষের জন্য জ্ঞানপ্রাপ্তি, জ্ঞানসৃষ্টি ও জ্ঞানপ্রয়োগের পথকে সুসংগঠিত করা—যাতে ভারত কেবল জ্ঞানের ভোক্তা নয়, বরং জ্ঞানের উৎপাদক ও রপ্তানিকারক শক্তি হয়ে উঠতে পারে। তাই NKC-কে কেবল একটি কমিশন নয়, বরং ভারতের জ্ঞানবিপ্লবের নীলনকশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গঠন ও প্রেক্ষাপট NKC গঠিত হয় ১৩ জুন ২০০৫ সালে, তখনকার প্রধানমন্ত্রী Manmohan Singh কর্তৃক।  চেয়ারম্যা...

Modification of NEP 1986 (POA 1992)

 জাতীয় শিক্ষানীতির সংশোধন (NPE 1986 – Modified in 1992) ভিত্তি: Acharya Rama Murti Review Committee (1990–91) Janardhan Reddy Committee (1991–92) এই দুটি কমিটির পুনর্বিবেচনার ভিত্তিতে National Policy of Education 1986-কে সংশোধন করা হয় এবং Programme of Action (POA), 1992 নামে রূপায়ণ পরিকল্পনা সংসদে অনুমোদিত হয়। সংশোধিত শিক্ষানীতি ১৯৯২ এর মূল উদ্দেশ্য A.সারাদেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা B.শিক্ষার সার্বজনীনতা, ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠা C.বৃত্তিমূলক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা সম্প্রসারণ D.শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি POA 1992 – প্রধান বৈশিষ্ট্য  ক্রম প্রধান বিষয় বিবরণ A.10+2+3 কাঠামো শক্তিশালীকরণ XI ও XII শ্রেণিকে এককভাবে বিদ্যালয় শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করা B.সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা  ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা → ২০০০ সালের মধ্যে লক্ষ্য C. Operation Black Board শক্তিশালী করা  প্রতিটি স্কুলে ন্যূনতম অবকাঠামো নিশ্চিত করা D . বৃত্তিমূলক শিক্ষা সম্প্রসারণ  Higher Secondary-র ২৫% শিক্ষার্থীকে vocational stream → ২০০০ সালের ...

National Policy on Education (1968)

 জাতীয় শিক্ষানীতি ১৯৬৮ প্রস্তাবনা স্বাধীনতার পর ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা উপনিবেশিক ধ্যানধারণার প্রভাবে আবদ্ধ ছিল। আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও বৈজ্ঞানিক সমাজ গঠনের জন্য শিক্ষাকে নতুন করে সংগঠিত করার প্রয়োজন দেখা দেয়। ১৯৬৪-৬৬ সালের কোঠারি কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ভারত সরকার ১৯৬৮ সালে প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করে। এই নীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল “শিক্ষাকে জাতীয় উন্নয়নের চালিকাশক্তি রূপে প্রতিষ্ঠা করা।” মূল লক্ষ্য 1.সর্বজনীন শিক্ষা বিস্তার 2.জাতীয় সংহতি ও একতা 3.মানসম্মত শিক্ষার নিশ্চয়তা 4.বৈজ্ঞানিক মনোভাব ও গবেষণার বিকাশ 5.অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা নীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য 1.সর্বজনীন ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিশুর জন্য বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত,বিদ্যালয় পরিকাঠামো ও শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধির নির্দেশ 2.তিন-ভাষা সূত্র (Three Language Formula) মাতৃভাষা/আঞ্চলিক ভাষা,হিন্দি,ইংরেজি ভাষাগত বৈচিত্র্য রক্ষা + জাতীয় ঐক্য জোরদার 3.হিন্দিকে রাজ্য ভাষা হিসেবে বিকাশ দেশব্যাপী যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে হিন্দি প্রচার,অন্য ভাষার প্রত...

National Education Policy 1986 & Operation Black Board

 জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) 1986 ভূমিকা [Introduction] জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) হল সেই শিক্ষানীতি যে শিক্ষানীতিতে জাতীয় জীবনে সর্বাঙ্গীণ বিকাশ (All round Development) ঘটে, যে শিক্ষানীতিতে জাতীয় সংহতি (National Integration) এবং আন্তর্জাতিক সংহতি (International Integration) বোধের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে, যে নীতিতে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সংস্কৃতির ধারার মধ্যে যোগসূত্র রচিত হয় এবং জাতীয় কল্যাণকর গড়ে ওঠে জীবনদর্শন। যে শিক্ষানীতিতে জাতীয় সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আধ্যাত্মিক প্রভৃতি দিকে জাতিকে মানব চেতনায় সমৃদ্ধ করে জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে সকলকে সমান অধিকারের ভিত্তিতে আত্মিক বন্ধনে বাঁধে, সেই শিক্ষানীতি হল জাতীয় শিক্ষানীতি (National Educational Policy)। সুতরাং, জাতীয় শিক্ষানীতিই হল দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল। আমাদের পরাধীন ভারতে কয়েকটি শিক্ষা কমিশন গঠিত হলেও বিশেষ ফলপ্রাপ্তি ঘটেনি, ঔপনিবেশিকতার (Colonial) বেড়াজাল থেকে শিক্ষা প্রক্রিয়ার মুক্তি ঘটেনি। স্বাধীনতার পর 1948 খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয় প্রথম 'বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন' বা 'রাধাকৃয়াণ কমিশন...

lndian Education Commission (1964 -66)

 কোঠারি কমিশন( 1964 -66) ভূমিকা [Introduction] পরাধীন ভারতে ঔপনিবেশিক শিক্ষায় যে বৈষম্যমূলক, নিম্নমানের কাঠামো গড়ে উঠেছিল, সেই কাঠামো ভেঙে নতুন করে গড়ার আহবান জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানালেও পরাধীনতার নাগপাশে বন্দি ভারতে তা সম্ভব হয়নি। তাই স্বাধীনতা লাভের পর জাতীয় সরকারের উদ্যোগে 1948 খ্রিস্টাব্দে ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ-এর সভাপতিত্বে প্রথম যে শিক্ষা কমিশন গঠিত হয় তা ছিল প্রধানত উচ্চশিক্ষা কেন্দ্রীয় কমিশন।এরপর 1952 খ্রিস্টাব্দে ড. লক্ষ্মণস্বামী মুদালিয়ারের সভাপতিত্বে যে দ্বিতীয় শিক্ষা কমিশন গঠিত হয় তা ছিল মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রিক কমিশন, তাই একে মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনও বলা হয়। ওই দুই কমিশনের সুপারিশগুলি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তদানীন্তন জাতীয় সরকারের নেতৃবৃন্দ উপলব্ধি করেছিলেন যে, পূর্বোক্ত কমিশনগুলির রিপোর্ট শিক্ষার সামগ্রিক রূপবিন্যাসে অসম্পূর্ণ, রিপোর্টগুলি এক-একটি স্তরের রূপবিন্যাস মাত্র। ফলে সামগ্রিকভাবে ভারতের দিয়েছিল আদর্শের সংকট এবং সুস্থ মূল্যবোধের অভাব। সুতরাং, শিক্ষার পুনর্বিন্যাস আশু প্রয়োজন। তাই তদানীন...